1. bushrasahittyabd@gmail.com : বুশরা সাহিত্য ম্যাগাজিন : বুশরা সাহিত্য ম্যাগাজিন
  2. info@www.pratidineralo.live : প্রতিদিনের আলো :
সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ০৯:৪০ অপরাহ্ন

সিলেটে পুত্রবধূর জুলুম অত্যাচারে অতিষ্ঠ শাশুড়ি

  • প্রকাশিত: সোমবার, ১২ মে, ২০২৫
  • ৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ- পুত্রবধু ও নিজের ছেলেদের জুলুম অত্যাচারে অতিষ্ঠ একজন মা। স্বামীর সাথে বিচ্ছেদের পর থেকে ৩টি শিশু ছেলেকে জীবনের সাথে সংগ্রাম করে লেখাপড়া শিখিয়ে এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে দিয়েও আজ বড় অসহায় জীবন-যাপন করছেন নগরীর শাহজালাল উপশহরের বাসিন্দা মার্জিয়া বেগম রুমা। তার মূল কারণ হচ্ছে বড় ছেলে তাহমিদ আহমদের স্ত্রীর পরকীয়া উগ্রতা আর বেপরোয়ারা আচরণ।

 

রোববার (১১ মে) দুপুরে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কান্নাভারাক্রান্ত কণ্ঠে এভাবেই কথাগুলো উচ্চারণ করলেন নির্যাতিত মার্জিয়া বেগম রুমা।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ১৯৯৪ সালে বিয়ানীবাজার উপজেলার দুবাগ এলাকার একজন তরুণের সাথে তার বিয়ে হয়। তার স্বামী ছিলেন মাদকাসক্ত ও নারী লোভী ও বেকার। সংসারের প্রতি কোন নজর ছিলো না স্বামীর। দীর্ঘদিন অপমান, অপবাদ সহ্য করে একদিন বাধ্য হয়ে ৩টি শিশু সন্তান নিয়ে সিলেট শহরে আসেন মার্জিয়া বেগম রুমা। স্বামী থাকা অবস্থায়ও টেইলারিং এর কাজ করে সন্তানদের মুখে খাবার দিতেন মার্জিয়া। দিনে দিনে উক্ত পরিবারের সদস্যদের নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গেলে নিজের এবং সন্তানদের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ চিন্তা করে স্বামীর বাড়ি থেকে ১৯৯৯ সালে সন্তানদের নিয়ে তিনি বেরিয়ে আসেন। নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে সন্তানদের সুখী করতে সিলেট নগরীর জিন্দাবাজার সহ বিভিন্ন স্থানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। সেই সন্তানরা আজ মায়ের সাথে অমানবিক আচরণ করছে। বড় ছেলে তাহমিদ আহমদ চৌধুরী বিয়ের পর স্ত্রীর সুরমা আক্তারের প্ররোচনায় পড়ে নিজের মায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।

 

লিখিত বক্তব্যে মার্জিয়া আক্তার রুমা বলেন, ২০২৫ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিকভাবে সুনামগঞ্জ জেলার ইসলামগঞ্জ বেড়াজালি গ্রামের মৃত সুলতান মিয়ার মেয়ে সুরমা আক্তারের সাথে তার প্রথম পুত্র তাহমিদ আহমদ চৌধুরীর বিবাহ হয়। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই তার পুত্রবধূর আসল চেহারা প্রকাশ পায়। বহুপুরুষে আসক্ত সুরমা আক্তার বিয়ের পর আমার ঘরে আসার কয়েকদিন পর থেকেই আমার ছেলে তাহমিদ আহমদের সাথে শুরু হয় ঝগড়া বিবাদ। সুরমা আক্তার আমার সহজ সরল ছেলে তাহমিদ আহমদকে ভালোভাবে গ্রহণ করেনি। সবসময়ই তার সাথে কারণে অকারণে ঝগড়া বিবাদে লিপ্ত হত। তাহমিদ আহমদ তার স্ত্রীর এই নিষ্ঠুর আচরণের অনেক অডিও রেকর্ডও মাকে প্রদান করে। শুধু তাই নয় সুরমা আক্তার আমার দ্বিতীয় ছেলে ওয়াহিদ আহমদের সাথেও নানা প্রলোভন দেখিয়ে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলে। সুরমা আক্তার দিনের বেশিরভাগ সময়ই মোবাইল ফোনে ভিডিও কলে পর পুরুষের সাথে কথা বলায় ব্যস্ত থাকত। সুরমা আক্তারে ফাঁদে পড়ে আমার ছেলেরা এখন আমার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে এবং নির্লজ্জভাবে আমার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। যা কোন সভ্য সমাজে মেনে নেওয়া যায় না। তার অপকর্মের প্রতিবাদ করলে ঝগড়া-ঝাটিতে লিপ্ত হত। বাসার কোন কাজেই হাত দিতো না।

 

সুরমা আক্তার তার স্বামী আমার বড় ছেলের সাথে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে তুলকালাম কান্ড করতো এবং গালিগালাজ করে ক্ষমতার দাপট দেখাত। কিছুদিন পূর্বে দ্বিতীয় ছেলে ওয়াহিদ আহমদকে ব্যাংক থেকে ঋণ তুলে শাহজালাল উপশহরের আই ব্লকে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দেই। দোকানটি আমার ছেলের মাধ্যমে মালিকের সাথে কথাবার্তা সম্পন্ন করে তিন বছরের জন্য একটি চুক্তির মাধ্যমে ভাড়া নেই। উক্ত ওয়ান টু হানড্রেড প্লাস দোকানের ট্রেড লাইসেন্সও আমার নামে রয়েছে। এসময় আমি মালিককে অগ্রীম ১ লাখ টাকা প্রদান করি এবং দোকান ভাড়া প্রতিমাসে ৯ হাজার টাকা নির্ধারিত হয়। ওয়াহিদ আহমদ প্রতিদিন আমাকে দোকানের আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রদান করত। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, বড় ছেলে বিয়ের পর তার ভাবী সুরমা আক্তারের প্ররোচনায় ও প্রলোভনে কিছুদিন যেতে না যেতেই ওয়াহিদ আহমদও তার ইচ্ছা মাফিক চলাফেরা শুরু করে। তাকেও সুরমা আক্তার তার প্রতি আসক্ত করে ফেলে। যেকারণে আমাকে গুরুত্ব না দিয়ে সেসহ ছেলেরা সুরমা আক্তারের কথামতো আমার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। এসব বিষয় আমার বড় ছেলেও নিরবে সহ্য করে যেতে থাকে এবং তার স্ত্রীর উগ্র আচরণ ও ব্যবহার সম্পর্কে অবগত করে। আমি আমার সন্তানদের সুন্দর জীবনের আশায় তাদেরকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ধার দেনা করে তাদেরকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে দেই। নগরীর শিবগঞ্জে তৃতীয় ছেলে তাওহিদকে হানড্রেড প্লাস টু নামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দেই। তাছাড়াও নগরীর লামাপাড়া এলাকায় বড় ছেলে তাহমিদ আহমদকে বেবী কর্ণার নামে আরও একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দেই। আমার ছেলেদের প্রতিষ্ঠিত করতে বর্তমানে আমি বিভিন্ন খাতে প্রায় ৫০/৬০ লাখ টাকার মতো ঋণগ্রস্ত আছি। আমার গর্ভের সন্তানরা যদি আমার সাথে এরকম অকৃতজ্ঞের মতো আচরণ করে তাহলে আমার আর যাবার জায়গা কোথায়। আমি ঋনের চিন্তায় এখন নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছি। তাছাড়া বিপথগামী ছেলেদের অত্যাচার সহ পুত্রবধূ সুরমা আক্তারের বেপরোয়া আচরণে আমি দিশেহারা হয়ে পড়েছি। তাহমিদ আহমদের বিয়ের মাত্র দুই মাস পেরুতে না পেরুতেই তার স্ত্রী সুরমা আক্তারের প্ররোচনায় পড়ে যায় সে। আমার গর্ভের ছেলে হয়েও সে তার স্ত্রী সুরমা আক্তারের কথা মতো চলতে শুরু করে। স্ত্রীর কথা ছাড়া এক পাও নড়ে না। কারণ স্ত্রী অত্যন্ত জালিম প্রকৃতির।

 

সুরমা আক্তারের অশ্লীল আচরণ ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজে কথা বলার সাহস পায়না আমার বড় ছেলে। শুক্রবার (৯ মে) দুপুরে আমার ৩ ছেলে ও সুরমা আক্তার কয়েকজন সন্ত্রাসী ছেলে-মেয়ে নিয়ে আমার উপশহরস্থ বাসায় চড়াও হয়। বাসায় ঢুকেই তারা আমাকে অকথ্য ভাষায় গলিগালাজ ও অতর্কিতভাবে আমার উপর হামলা চালায়। এসময় তারা আমাকে হুমকি দিয়ে বলে আমার দেওয়া দোকান কোঠা এবং বাসার সকল মালামাল তাদের দিয়ে দিতে। এতে আমি অপরাগতা প্রকাশ করায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এবং আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। বাসায় তাণ্ডব চালানো শেষে তারা আমার উপশহরের ই-ব্লকে অবস্থিত দোকানে গিয়ে জোরপূর্বক দোকানে বসা আমার ছোট ছেলে মেয়েকে বের করে দিয়ে মালামাল ও টাকা পয়সা লুটপাটের চেষ্টা করে। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল আমার দোকানে যাই। তখন হামলাকারীরা দোকানের মালামাল গাড়িতে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। আমি এর প্রতিবাদ জানালে আমার ৩ ছেলে ও বড় ছেলের স্ত্রীসহ কতিপয় সন্ত্রাসী আমাকে মারধর করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যায়। আহত অবস্থায় আমার স্বজনরা আমাকে ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।

 

লিখিত বক্তব্যে মার্জিয়া আরো উল্লেখ করেন, নগরীর বাগবাড়ি এলাকার শারমিন আক্তার নামের একটি মেয়ে তার দোকানের কর্মচারী ছিল। তাকে তিনি মেয়ের মতো করে রাখেন। সেই মেয়েটি ২৪ এপ্রিল ভোরে সবাই যখন ঘুমে ছিলাম, সে সময় আমার আলমিরা থেকে ১১ ভরি ওজনের আনুমানিক ১৮ লাখ টাকা মূল্যের স্বর্ণালংকার ও এক ছেলেকে বিদেশে পাঠানোর জন্য রক্ষিত ১০ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায়। এ ঘটনায় আমি ২৪ এপ্রিল শাহপরান (রহ.) থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি। মার্জিয়া সাংবাদিকদের মাধ্যমে প্রশাসনসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের সহযোগিতা কামনা করে বলেন, বুকে আগলে রেখে সন্তানদের বড় করে আজ পুত্রবধুর কারণে তিনি চরম নিরাপত্তাহীন ও অপমানিত হচ্ছেন। এ ব্যাপারে তিনি সকল মহলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

শেয়ার করুন

আরো পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট